তাবলিগের ৬ নম্বর বয়ান | ছয় নম্বরের আলোচনা

তাবলিগের ৬ নম্বর বয়ান | ছয় নম্বরের আলোচনা  সম্মানিত সাহাবীগণ হুজুর পাক সা: এর কাছে থাইকা বহুৎ গুনে গুণান্বিত হওয়ার অধিকার অর্জন করেছিলেন, এই সমস্ত গুণের মধ্য হইতে যদি আমরা অল্প কয়েকটি গুণের উপর জোর মেহনত করি এবং আমল করে দুনিয়ায় চলতে পারলে দ্বীনের উপর চলা একদম সহজ হয়ে যাবে। এবং এগুলাই মূলত তাবলিগের ৬ নম্বর বয়ান‌, গুণগুলা হচ্ছে এই যথা- ★ কালিমা ★ সালাত অর্থাৎ নামাজ ★ ইলম্ এবং জিকির ★ তাসহীহ অর্থাৎ সঠিক নিয়ত ★ একরামুল মুসলিমীন, তথা মুসলমানদের সম্মান করা ★ দাওয়াত এবং তাবলিগ, অর্থাৎ মানুষের কাছে দ্বীনের বাণী পৌঁছে দেওয়া।   তাবলিগের ৬ নম্বর বয়ান  কালিমা অর্থাৎ এই কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আসমান ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাই এবং আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয়ত আর কোন সৃষ্টিকর্তা নাই, এবং হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে আল্লাহ পাক সমগ্র বিশ্ববাসীর উপর বান্দা এবং রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ পাক সবকিছুই করতে সক্ষম মাখলুককে ছাড়া, আর মাখলুক অর্থাৎ মানুষ আল্লাহ পাকের সৃষ্ট জীব কিছুই করতে পারবে না আল্লাহ পাকের হুকুম অর্থাৎ আদেশ ছাড়া। আর যেই ব্যক্তি এই কালিমা পাঠ করল অর্থাৎ দ্বীন ধর্ম গ্রহণ করল সে দুনিয়াতে লাভবান এমনকি পরকালেও লাভবান হবে।  কালিমার লাভ বলা হয় কোন ব্যক্তি যদি সহি এবং এখলাসের নিয়তে এই কালিমা একবার পাঠ করে আল্লাহ পাক ওই ব্যক্তির জিন্দেগির সমস্ত গুনাহ খাতা মাফ করিয়া দিবেন, আরো বলা হয়েছে 80 বছরের কাটটা কাফের ও যদি এই কালিমা সঠিক নিয়তে দিল থেকে পাঠ করে তাহলে আল্লাহ পাক ওই কাফেরেরও জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন। বর্ণিত আছে রাসূল সাঃ বলেছেন কোন ব্যক্তি যদি দৈনিক একশতবার এই কালিমা পাঠ করে তাহলে কাল হাশরের কঠিন ময়দানে ওই পাঠ করনেওয়ালা ব্যক্তির চেহারা ১৪ তারিখের পূর্ণিমার চাঁদের চেয়েও বেশি জলমল করতে থাকবে। তো আমাদের সকলকেই এই কালিমার লাভ জানিয়া সে অনুযায়ী দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় জগতে সফলতা অর্জন করতে হবে, আর সফলতা অর্জন করার জন্য আমাদেরকে সঠিক নিয়তে বেশি বেশি কালিমা পাঠ করতে হবে, এবং যারা দিনের পথে অজ্ঞ দ্বীন সম্পর্কে জানে না, তাদেরকে কালিমার দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে যেন তারা ও পরকালে শান্তির দেখা পেতে পারে।  নামাজ কোন ব্যক্তি যখন কালেমা পাঠ করল অর্থাৎ আল্লাহপাক ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনলো তখন ওই ব্যক্তির উপর আবশ্যক হচ্ছে নামাজ, নামাজের মাধ্যমে একমাত্র আল্লাহ পাকের নৈকট্য হাসিল করা যায়, কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহ পাকের নৈকট্য হাসিল করতে চায় তাহলে সে যেন, বেশি বেশি নামাজ পড়ে, আর যদি নামাজ না পড়ে তাহলে আল্লাহ পাকের নিকটবর্তী হওয়া সম্ভব না। এই নামাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনমে মুহাম্মদ সাঃ যেভাবে নামাজ পড়েছেন এবং তাহার সম্মানিত সাহাবা আজমাঈনগণকে শিক্ষা দিয়েছেন সেই ভাবে নামাজ আদায় করা, মোট কথা হচ্ছে নামাজের ফরজ ওয়াজিব সুন্নত মুস্তাহাব অর্থাৎ নামাজের যে তারত গুলো আছে ওইগুলো মানিয়া নামাজের মধ্যে বাস্তবায়ন করিয়া তারপর সঠিক ধ্যানে নামাজ আদায় করা।  নামাজের লাভ বলা হয় কোন ব্যক্তি যদি সহি নিয়তে খালেছ দিলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তাহলে কেয়ামতের দিন অর্থাৎ মুসিবতের দিনে আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তিকে নিজ জিম্মাদারে জান্নাতের মধ্যে প্রবেশ করাবেন। নামাজ পড়লে চেহারা সুন্দর হয় আরো বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি যদি নিয়মিত অর্থাৎ 40 দিন পর্যন্ত একাধারে জামাতের সহিত নামাজ আদায় করে, তাহলে আল্লাহ পাক ওই ব্যক্তিকে পাঁচটি পুরস্কার দিবেন। এরমধ্যে দুইটি পুরস্কার হচ্ছে দুনিয়াতে এক নাম্বার হচ্ছে তাহার রিজিকের অভাব দূর করে দিবেন অর্থাৎ এহতেমাম এর সাথে নামাজ পড়নেওয়ালা ব্যক্তির রিজিকের অভাব হবে না, আল্লাহ পাক তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দিবেন। দ্বিতীয়ত কবরের আজাব মাফ করে দিবেন, অর্থাৎ কোন মানুষ মৃত্যুবরণ করার পর তার প্রথম গাটি হচ্ছে কবর আর কেউ যদি এই কবর থেকে মুক্তি পেয়ে যায় তাহলে তার বাকি গাটিগুলোও সহজ হয়ে যাবে।  তিনটি পুরস্কার হচ্ছে আখেরাতে প্রথমত ওই ব্যক্তির আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে, কোন ব্যক্তির আমলনামা ডান হাতে দেওয়া মানে তার জন্য জান্নাতে যাওয়ার সুসংবাদ দেওয়া আর বাম হাতে দেওয়া মানে জাহান্নামে যাওয়ার জন্য সুসংবাদ দেওয়া, তো এহতেমামের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়নেওয়ালা ব্যক্তির আমলনামা কেয়ামতের ময়দানে ডান হাতে দেওয়া হবে। দ্বিতীয়তঃ তাকে ফুলসিরার ফুল বিদ্যুৎ আকাশে বিজলির মত দ্রুতগতিতে পার করে দিবেন, অর্থাৎ যে রাস্তাটা ৩০ হাজার বছরের রাস্তা এবং খুব অন্ধকার হবে রাস্তাটাও চুলের চাইতেও আরো অনেক চিকন হবে, সেই রাস্তাটা আল্লাহ পাক এহতেমামের সাথে নামাজ পড়নে ওয়ালা ব্যক্তিকে বিজলির আকারে পার করে দিবেন। নামাজি ব্যক্তিকে সর্বশেষ পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে জান্নাত, আর এই জান্নাত দেওয়ার পর কোন ব্যক্তির মনে আর কোন কিছুর আকাঙ্ক্ষা থাকবে না। তাই এই সমস্ত পুরস্কার পাওয়ার জন্য আমাদেরকে নামাজ আদায় করতে হবে, পাশাপাশি নফল নামাজের গুরুত্ব দিতে হবে, কেননা নফল নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ পাকের অতি নিকটবর্তী হওয়া যায়।  ইলম্ ও জিকির তো আমাদেরকে নামাজের পরে অর্থাৎ নামাজ কে সঠিকভাবে আদায় করার জন্য ইলম শিক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি, বলা হয় কোন ব্যক্তি যখন এলেম শিক্ষা করার জন্য বাহির হয় তখন আল্লাহ পাক তার রাস্তাকে সহজ করিয়া দেন, হাদিসের মধ্যে এসেছে কোন ব্যক্তি যখন এলেম শিক্ষা করার জন্য ঘর থেকে বাহির হয় তখন তার জন্য সমস্ত মাখলুকাত পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে। আর এই এলেমটা দুই ভাগে বিভক্ত একটা হচ্ছে ফাজায়েলে এলেম এবং অপরটি হচ্ছে মাসায়েলে এলেম, ফাজায়েলে এলেম আমরা বিভিন্ন কিতাবাদী বই পুস্তক থেকে অর্জন করব, আর মাসায়েলে এলেম গুলো আছে ওইগুলো আমরা হক্কানী ওলামায়ে কেরামের কাছ থেকে শিখব, যেমনটি শিখানো হচ্ছে মাদ্রাসা গুলোর মধ্যে।  এরপর হচ্ছে জিকির জিকির অনেক দামী একটা জিনিস আমরা সর্ব অবস্থায় জিকির করব, যে ব্যক্তি সর্বাবস্থায় জিকির করবে জিকিরের মাধ্যমে তার জবানকে চালু রাখবে, কাল কেয়ামতের ময়দানে ওই ব্যক্তি জিকির করতে করতে হাসতে হাসতে জান্নাতের মধ্যে চলে যাবে, আর জিকিরের মধ্যে অনেক জিকির রয়েছে এর মধ্যে সর্ব উত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। এছাড়াও প্রত্যেক নামাজের পর যে সমস্ত জিকির রয়েছে আমরা সেগুলো আদায় করার চেষ্টা করব, বিশেষ করে তাসবীহ ফাতেমি যেগুলো হুজুর সা: হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আপনাকে পড়ার জন্য দিয়েছিলেন, সেগুলো আমরা প্রত্যেকেই আদায় করার চেষ্টা করব।  একরামুল মুসলিমীন  একরামুল মুসলিমীন এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল এটি সাদকায়ে জারিয়ার মত, আপনি রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতেছেন এমন তো অবস্থায় কোন একটি কষ্টদায়ক বস্তু রাস্তার মধ্যে দেখতে পেলেন সেই বস্তুটি আপনি রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলে দেন তাহলে আপনি একরামুল মুসলিমিন এর কাজটি করতে পারলেন। কোন এক ভাই খাওয়ার মধ্যে বসেছে তার পানির প্রয়োজন হয়েছে, আপনি যখন বুঝতে পারবেন তখন তাকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দেন, এক ভাইয়ের জুতা উল্টে পড়ে আছে, আপনি ওই ভাই জুতাটা সোজা করে দেন এতে আপনার সম্মান কমবে না বরং এতে আপনার সম্মান বাড়বে, এমনকি আপনি বিশেষভাবে সওয়াবের ও অধিকারী হবেন। এছাড়াও আরো যেভাবে মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করা যায় সেভাবে মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করবেন, এতে আপনার ওই মঙ্গল হবে, আর যদি কারো সহযোগিতা করতে না পারেন তাহলে অন্তত পক্ষে তাহার কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না।  সহি নিয়ত আপনি যখনই কোন কাজ করবেন এর জন্য সহী নিয়ত করা আবশ্যক, কেননা আপনি যদি সঠিক নিয়ত না করেন তাহলে আপনার এই কাজ করা কষ্টকর হয়ে যাবে। এছাড়া হাদিসের মধ্যে বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি যদি কোন একটা ভালো কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় খালেছ দিলে সহি নিয়ত করে, তাহলে আল্লাহ পাক এই সহি নিয়তের কারণে তার আমলনামায় সওয়াবব লিখে দেয়, যদিও সে কাজটি না করে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত যখনই আমরা কোন একটা কাজ করা সিদ্ধান্ত নিব তাহলেই আমরা সহীহ অর্থাৎ সঠিক নিয়ত করব যার ফলে আমাদের আমলনামায় সেই কাজের সোয়াব চলে আসবে। যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টির জন্য এক টাকাও পর্যন্ত দান করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা ওই এক টাকার সোয়াবকে বাড়াইতে বাড়াইতে পাহাড় পর্যন্ত বাড়িয়ে দিবেন তাই আমরা সকলেই সহি নিয়ত করব ইনশাল্লাহ  দাওয়াত এবং তাবলিগ  দাওয়াত ও তাবলিগের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দাওয়াত অর্থ আহবান করা মানুষকে ঢাকা আর তাবলগ অর্থ হচ্ছে পৌঁছে দেওয়া, উভয়টির অর্থ একসাথে হয় আল্লাহর বিধান ও রাসুল সা: এর তরিকা গুলো মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়া, আল্লাহর দেওয়া জান এবং দ্বীন আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা, অর্থাৎ আল্লাহর বাণীগুলো মানুষকে পৌঁছাইয়া দেওয়ার জন্য ঘর থেকে বাহির হওয়া এবং দ্বীনের লাইনে মেহনত করা। এই দাওয়াতের কাজ সমস্ত নবী-রাসূল ও আম্বিয়া একরাম করে গিয়েছেন এবং আমাদের কেউ এর কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কেননা হযরত মুহাম্মদ সাঃ উনি হচ্ছেন সর্বশেষ নবী উনার পর আর কোন নবী আসবেন না তাই উনার ওয়ারিশ হচ্ছেন হক্কানী ওলামায়ে কেরামগণ, তাই এখন দাওয়াতের কাজ আমাদের সকলের জিম্মায়, সেজন্য আমরা সকলেই আল্লাহর রাস্তায় বাহির হয়ে আল্লাহর বাণী মানুষকে পৌঁছে দিয়ে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারব।

সম্মানিত সাহাবীগণ হুজুর পাক সা: এর কাছে থাইকা বহুৎ গুনে গুণান্বিত হওয়ার অধিকার অর্জন করেছিলেন, এই সমস্ত গুণের মধ্য হইতে যদি আমরা অল্প কয়েকটি গুণের উপর জোর মেহনত করি এবং আমল করে দুনিয়ায় চলতে পারলে দ্বীনের উপর চলা একদম সহজ হয়ে যাবে। এবং এগুলাই মূলত তাবলিগের ৬ নম্বর বয়ান‌, গুণগুলা হচ্ছে এই যথা-

★ কালিমা

★ সালাত অর্থাৎ নামাজ

★ ইলম্ এবং জিকির

★ তাসহীহ অর্থাৎ সঠিক নিয়ত

★ একরামুল মুসলিমীন, তথা মুসলমানদের সম্মান করা

★ দাওয়াত এবং তাবলিগ, অর্থাৎ মানুষের কাছে দ্বীনের বাণী পৌঁছে দেওয়া।

তাবলিগের ৬ নম্বর বয়ান

কালিমা

অর্থাৎ এই কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আসমান ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাই এবং আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয়ত আর কোন সৃষ্টিকর্তা নাই, এবং হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে আল্লাহ পাক সমগ্র বিশ্ববাসীর উপর বান্দা এবং রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন।

আল্লাহ পাক সবকিছুই করতে সক্ষম মাখলুককে ছাড়া, আর মাখলুক অর্থাৎ মানুষ আল্লাহ পাকের সৃষ্ট জীব কিছুই করতে পারবে না আল্লাহ পাকের হুকুম অর্থাৎ আদেশ ছাড়া। আর যেই ব্যক্তি এই কালিমা পাঠ করল অর্থাৎ দ্বীন ধর্ম গ্রহণ করল সে দুনিয়াতে লাভবান এমনকি পরকালেও লাভবান হবে।

কালিমার লাভ বলা হয় কোন ব্যক্তি যদি সহি এবং এখলাসের নিয়তে এই কালিমা একবার পাঠ করে আল্লাহ পাক ওই ব্যক্তির জিন্দেগির সমস্ত গুনাহ খাতা মাফ করিয়া দিবেন, আরো বলা হয়েছে 80 বছরের কাটটা কাফের ও যদি এই কালিমা সঠিক নিয়তে দিল থেকে পাঠ করে তাহলে আল্লাহ পাক ওই কাফেরেরও জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন।

বর্ণিত আছে রাসূল সাঃ বলেছেন কোন ব্যক্তি যদি দৈনিক একশতবার এই কালিমা পাঠ করে তাহলে কাল হাশরের কঠিন ময়দানে ওই পাঠ করনেওয়ালা ব্যক্তির চেহারা ১৪ তারিখের পূর্ণিমার চাঁদের চেয়েও বেশি জলমল করতে থাকবে।

তো আমাদের সকলকেই এই কালিমার লাভ জানিয়া সে অনুযায়ী দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় জগতে সফলতা অর্জন করতে হবে, আর সফলতা অর্জন করার জন্য আমাদেরকে সঠিক নিয়তে বেশি বেশি কালিমা পাঠ করতে হবে, এবং যারা দিনের পথে অজ্ঞ দ্বীন সম্পর্কে জানে না, তাদেরকে কালিমার দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে যেন তারা ও পরকালে শান্তির দেখা পেতে পারে।

নামাজ

কোন ব্যক্তি যখন কালেমা পাঠ করল অর্থাৎ আল্লাহপাক ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনলো তখন ওই ব্যক্তির উপর আবশ্যক হচ্ছে নামাজ, নামাজের মাধ্যমে একমাত্র আল্লাহ পাকের নৈকট্য হাসিল করা যায়, কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহ পাকের নৈকট্য হাসিল করতে চায় তাহলে সে যেন, বেশি বেশি নামাজ পড়ে, আর যদি নামাজ না পড়ে তাহলে আল্লাহ পাকের নিকটবর্তী হওয়া সম্ভব না।

এই নামাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনমে মুহাম্মদ সাঃ যেভাবে নামাজ পড়েছেন এবং তাহার সম্মানিত সাহাবা আজমাঈনগণকে শিক্ষা দিয়েছেন সেই ভাবে নামাজ আদায় করা, মোট কথা হচ্ছে নামাজের ফরজ ওয়াজিব সুন্নত মুস্তাহাব অর্থাৎ নামাজের যে তারত গুলো আছে ওইগুলো মানিয়া নামাজের মধ্যে বাস্তবায়ন করিয়া তারপর সঠিক ধ্যানে নামাজ আদায় করা।

নামাজের লাভ বলা হয় কোন ব্যক্তি যদি সহি নিয়তে খালেছ দিলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তাহলে কেয়ামতের দিন অর্থাৎ মুসিবতের দিনে আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তিকে নিজ জিম্মাদারে জান্নাতের মধ্যে প্রবেশ করাবেন। নামাজ পড়লে চেহারা সুন্দর হয় আরো বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি যদি নিয়মিত অর্থাৎ 40 দিন পর্যন্ত একাধারে জামাতের সহিত নামাজ আদায় করে, তাহলে আল্লাহ পাক ওই ব্যক্তিকে পাঁচটি পুরস্কার দিবেন।

এরমধ্যে দুইটি পুরস্কার হচ্ছে দুনিয়াতে এক নাম্বার হচ্ছে তাহার রিজিকের অভাব দূর করে দিবেন অর্থাৎ এহতেমাম এর সাথে নামাজ পড়নেওয়ালা ব্যক্তির রিজিকের অভাব হবে না, আল্লাহ পাক তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দিবেন। দ্বিতীয়ত কবরের আজাব মাফ করে দিবেন, অর্থাৎ কোন মানুষ মৃত্যুবরণ করার পর তার প্রথম গাটি হচ্ছে কবর আর কেউ যদি এই কবর থেকে মুক্তি পেয়ে যায় তাহলে তার বাকি গাটিগুলোও সহজ হয়ে যাবে।

তিনটি পুরস্কার হচ্ছে আখেরাতে প্রথমত ওই ব্যক্তির আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে, কোন ব্যক্তির আমলনামা ডান হাতে দেওয়া মানে তার জন্য জান্নাতে যাওয়ার সুসংবাদ দেওয়া আর বাম হাতে দেওয়া মানে জাহান্নামে যাওয়ার জন্য সুসংবাদ দেওয়া, তো এহতেমামের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়নেওয়ালা ব্যক্তির আমলনামা কেয়ামতের ময়দানে ডান হাতে দেওয়া হবে।

দ্বিতীয়তঃ তাকে ফুলসিরার ফুল বিদ্যুৎ আকাশে বিজলির মত দ্রুতগতিতে পার করে দিবেন, অর্থাৎ যে রাস্তাটা ৩০ হাজার বছরের রাস্তা এবং খুব অন্ধকার হবে রাস্তাটাও চুলের চাইতেও আরো অনেক চিকন হবে, সেই রাস্তাটা আল্লাহ পাক এহতেমামের সাথে নামাজ পড়নে ওয়ালা ব্যক্তিকে বিজলির আকারে পার করে দিবেন। নামাজি ব্যক্তিকে সর্বশেষ পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে জান্নাত, আর এই জান্নাত দেওয়ার পর কোন ব্যক্তির মনে আর কোন কিছুর আকাঙ্ক্ষা থাকবে না।

তাই এই সমস্ত পুরস্কার পাওয়ার জন্য আমাদেরকে নামাজ আদায় করতে হবে, পাশাপাশি নফল নামাজের গুরুত্ব দিতে হবে, কেননা নফল নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ পাকের অতি নিকটবর্তী হওয়া যায়।

ইলম্ ও জিকির

তো আমাদেরকে নামাজের পরে অর্থাৎ নামাজ কে সঠিকভাবে আদায় করার জন্য ইলম শিক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি, বলা হয় কোন ব্যক্তি যখন এলেম শিক্ষা করার জন্য বাহির হয় তখন আল্লাহ পাক তার রাস্তাকে সহজ করিয়া দেন, হাদিসের মধ্যে এসেছে কোন ব্যক্তি যখন এলেম শিক্ষা করার জন্য ঘর থেকে বাহির হয় তখন তার জন্য সমস্ত মাখলুকাত পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে। আর এই এলেমটা দুই ভাগে বিভক্ত একটা হচ্ছে ফাজায়েলে এলেম এবং অপরটি হচ্ছে মাসায়েলে এলেম, ফাজায়েলে এলেম আমরা বিভিন্ন কিতাবাদী বই পুস্তক থেকে অর্জন করব, আর মাসায়েলে এলেম গুলো আছে ওইগুলো আমরা হক্কানী ওলামায়ে কেরামের কাছ থেকে শিখব, যেমনটি শিখানো হচ্ছে মাদ্রাসা গুলোর মধ্যে।

এরপর হচ্ছে জিকির জিকির অনেক দামী একটা জিনিস আমরা সর্ব অবস্থায় জিকির করব, যে ব্যক্তি সর্বাবস্থায় জিকির করবে জিকিরের মাধ্যমে তার জবানকে চালু রাখবে, কাল কেয়ামতের ময়দানে ওই ব্যক্তি জিকির করতে করতে হাসতে হাসতে জান্নাতের মধ্যে চলে যাবে, আর জিকিরের মধ্যে অনেক জিকির রয়েছে এর মধ্যে সর্ব উত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। এছাড়াও প্রত্যেক নামাজের পর যে সমস্ত জিকির রয়েছে আমরা সেগুলো আদায় করার চেষ্টা করব, বিশেষ করে তাসবীহ ফাতেমি যেগুলো হুজুর সা: হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আপনাকে পড়ার জন্য দিয়েছিলেন, সেগুলো আমরা প্রত্যেকেই আদায় করার চেষ্টা করব।

একরামুল মুসলিমীন 

একরামুল মুসলিমীন এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল এটি সাদকায়ে জারিয়ার মত, আপনি রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতেছেন এমন তো অবস্থায় কোন একটি কষ্টদায়ক বস্তু রাস্তার মধ্যে দেখতে পেলেন সেই বস্তুটি আপনি রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলে দেন তাহলে আপনি একরামুল মুসলিমিন এর কাজটি করতে পারলেন।

কোন এক ভাই খাওয়ার মধ্যে বসেছে তার পানির প্রয়োজন হয়েছে, আপনি যখন বুঝতে পারবেন তখন তাকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দেন, এক ভাইয়ের জুতা উল্টে পড়ে আছে, আপনি ওই ভাই জুতাটা সোজা করে দেন এতে আপনার সম্মান কমবে না বরং এতে আপনার সম্মান বাড়বে, এমনকি আপনি বিশেষভাবে সওয়াবের ও অধিকারী হবেন।

এছাড়াও আরো যেভাবে মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করা যায় সেভাবে মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করবেন, এতে আপনার ওই মঙ্গল হবে, আর যদি কারো সহযোগিতা করতে না পারেন তাহলে অন্তত পক্ষে তাহার কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না।

সহি নিয়ত

আপনি যখনই কোন কাজ করবেন এর জন্য সহী নিয়ত করা আবশ্যক, কেননা আপনি যদি সঠিক নিয়ত না করেন তাহলে আপনার এই কাজ করা কষ্টকর হয়ে যাবে। এছাড়া হাদিসের মধ্যে বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি যদি কোন একটা ভালো কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় খালেছ দিলে সহি নিয়ত করে, তাহলে আল্লাহ পাক এই সহি নিয়তের কারণে তার আমলনামায় সওয়াবব লিখে দেয়, যদিও সে কাজটি না করে।

তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত যখনই আমরা কোন একটা কাজ করা সিদ্ধান্ত নিব তাহলেই আমরা সহীহ অর্থাৎ সঠিক নিয়ত করব যার ফলে আমাদের আমলনামায় সেই কাজের সোয়াব চলে আসবে। যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টির জন্য এক টাকাও পর্যন্ত দান করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা ওই এক টাকার সোয়াবকে বাড়াইতে বাড়াইতে পাহাড় পর্যন্ত বাড়িয়ে দিবেন তাই আমরা সকলেই সহি নিয়ত করব ইনশাল্লাহ

দাওয়াত এবং তাবলিগ

দাওয়াত ও তাবলিগের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দাওয়াত অর্থ আহবান করা মানুষকে ঢাকা আর তাবলগ অর্থ হচ্ছে পৌঁছে দেওয়া, উভয়টির অর্থ একসাথে হয় আল্লাহর বিধান ও রাসুল সা: এর তরিকা গুলো মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়া, আল্লাহর দেওয়া জান এবং দ্বীন আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা, অর্থাৎ আল্লাহর বাণীগুলো মানুষকে পৌঁছাইয়া দেওয়ার জন্য ঘর থেকে বাহির হওয়া এবং দ্বীনের লাইনে মেহনত করা।

এই দাওয়াতের কাজ সমস্ত নবী-রাসূল ও আম্বিয়া একরাম করে গিয়েছেন এবং আমাদের কেউ এর কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কেননা হযরত মুহাম্মদ সাঃ উনি হচ্ছেন সর্বশেষ নবী উনার পর আর কোন নবী আসবেন না তাই উনার ওয়ারিশ হচ্ছেন হক্কানী ওলামায়ে কেরামগণ, তাই এখন দাওয়াতের কাজ আমাদের সকলের জিম্মায়, সেজন্য আমরা সকলেই আল্লাহর রাস্তায় বাহির হয়ে আল্লাহর বাণী মানুষকে পৌঁছে দিয়ে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারব।

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال